চাঁদপুর লঞ্চঘাটে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার শিকার বোগদাদিয়া-৯ লঞ্চ

স্টাফ রিপোর্টার : চাঁদপুর লঞ্চঘাটে ভিড়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চাঁদপুর ঈদগাহ ফেরিঘাট রুটের লঞ্চ এমভি বোগদাদিয়া-৯। এ সময় ঘাটে থাকা রফ রফ লঞ্চের সাথে সংঘর্ষ হয় বোগদাদিয়া লঞ্চের। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে লঞ্চের যাত্রীরা। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হয়েছে বলে ফেসবুক পেইজে লেখা তথ্যে জানা যায়। ২ সেপ্টেম্বর চাঁদপুর লঞ্চঘাট টার্মিনাল সম্মুখে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চাঁদপুর লঞ্চঘাটে যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি রফরফের সাথে এমভি বোগদাদিয়া-৯ লঞ্চটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আসা প্রচণ্ড গতিতে সংঘর্ষের ঘটনায় এমভি রফরফের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়েছে। এ ঘটনায় কমপক্ষে অর্ধশতাধিত যাত্রী আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আহত হয়। মারাত্মক আহত ১০জন যাত্রীকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হয়। বাকি আহতদের স্থানীয়ভাবে ও লঞ্চে থাকা মেডিসিনের মাধ্যমে চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে তাদের ঢাকায় গন্তব্যের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় নৌ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে বলে নৌ থানার পুলিশ জানায়।

চাঁদপুর নৌ টার্মিনালে দায়িত্বরত লঞ্চ মালিকদের প্রতিনিধিরা জানান, চাঁদপুর নৌ টার্মিনাল ঘাটে লঞ্চ এমভি রফরফ নোঙ্গর করে দুপুর ১২টার সময় ছাড়ার জন্য বেঁধে রেখে যাত্রী উঠাচ্ছিল। হঠাৎ ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে আসা ঈদগাহ ফেরিঘাটে যাওয়া যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি বোগদাদিয়া-৯ তার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ব্যাপক গতিতে এসে যাত্রী নিয়ে অবস্থান করা অবস্থায় রফরফ লঞ্চটিকে প্রচণ্ডভাবে আঘাত করে। এতে করে তাৎক্ষণিক লঞ্চে থাকা অপ্রস্তুত যাত্রীরা লঞ্চের ভেতরে ছিটকে পড়ে লোহার সাথে মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে কম-বেশি আহত হয়। এ সময় যাত্রীরা বেগতিক অবস্থার দিক চিন্তা করে লঞ্চে থাকা যাত্রীরা এদিক সেদিক ছোটাছুটি করে ও অনেকে নদীতে লাফিয়ে পড়ে জীবন বাঁচাতে। এ ঘটনায় লঞ্চে থাকা যাত্রীদের মধ্যে থেকে কমপক্ষে অর্ধশতাধিক যাত্রী মারাত্মকভাবে আহত হয়। এদিকে তাৎক্ষণিক নৌ-টার্মিনালে থাকা লঞ্চ স্টাফরা ও নৌ পুলিশ যাত্রীদের উদ্ধারে এগিয়ে এসে যাত্রীদেরকে উদ্ধার করে এবং তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করে তাদের গন্তব্যে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন।

এ ঘটনায় মারাত্মক আহত ১০জনকে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। পরে ২টি লঞ্চের সুপার ভাইজার, মালিক পক্ষের লোকজন ও নৌ পুলিশের সহায়তায় আলোচনা সাপেক্ষে সমঝোতায় চাঁদপুর নৌ টার্মিনাল ত্যাগ করে বলে জানান নৌ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মনিরুজ্জামান মনির।

এ ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী যাত্রী ফরিদগঞ্জের রাবেয়া বেগম ও সদর উপজেলার আশিকাটির শ্রমিকের কাজ করা মনির মিয়া জানান, যাত্রীরা ঢাকা যাওয়ার জন্য লঞ্চে উঠে বসেছিল। হঠাৎ বোগদাদিয়া লঞ্চ শুনেছি রফরফকে প্রচণ্ডভাবে আঘাত করায় যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। অনেকে ছিটকে পড়ে ও ছুটাছুটি করতে গিয়ে আহত হয়েছে।

এ বিষয়ে নৌ-টার্মিনালের বিআইডব্লিওটিআইএ-এর (টিআই) ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মোঃ শাহ আলম জানান, ২টি লঞ্চের সংঘর্ষে একটি লঞ্চের কিছু ক্ষতিসাধন হয়। এ ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে কিছু যাত্রী আহত হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা দিয়ে গন্তব্যে পাঠানা হয়েছে। তবে বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়নি।

এ বিষয়ে নৌ-টার্মিনালে অবস্থানরত নৌ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মনিরুজ্জামান মনির বলেন, ২টি লঞ্চের মধ্যে ধাক্কা লেগে রফরফ লঞ্চের কিছু ক্ষতিসাধন হয়েছে। যাত্রীরা তেমন আহত হয়নি। অল্প কিছু যাত্রী আহত হয়েছে। পরে ২টি লঞ্চের মালিক প্রতিনিধিরা বসে সমাধান করে বিষয়টি নিস্পত্তি করেছে।

Related posts

Leave a Comment