শিক্ষানবিশ উকিল আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার:

শিক্ষানবিশ উকিল আবু সুফিয়ান এর বিরুদ্ধে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। চাঁদপুর সদর উপজেলাধীন বাগাদী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের পশ্চিম সকদি সাহেব বাজারস্থ পাঠান বাড়ির মৃত মোহাম্মদ হাসিম পাঠানের ছেলে তিনি।

জানা যায়, আবু সুফিয়ান দীর্ঘদিন যাবত আদম ব্যবসা করতেন। এই আদম ব্যবসা করতে গিয়ে এলাকার অনেক নিরীহ গরিব মানুষকে পথে বসিয়েছেন এমনটাই অভিযোগ এলাকাবাসীর। এই ঘটনায় বেশ কিছুদিন তিনি ঢাকা এবং চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন স্থানে গাঁ ঢাকা দিয়ে থাকেন। এখনো নিজ এলাকার ছেড়ে চাঁদপুর শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। গ্রামের নিরীহ মানুষদেরকে মিথ্যা মামলা দিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানি অভিযোগ আছে তার নামে।

বর্তমানে শিক্ষানবিশ উকিল হিসেবে সাইনবোর্ড ব্যবহার করে বিভিন্ন নিরীহ মানুষের জমি জোরপূর্বক দখল করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এমন ভূমিদস্যূতার কারণে আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে চাঁদপুর মডেল থানায় ও চাঁদপুর কোর্টে একাধিক মামলা চলমান রয়েছে বলেও জানা যায়।

একই এলাকার ভুক্তভোগী তাসলিমা বেগম জানান, আমার স্বামী বিগত ০৭/০২/২০০৫ইং তারিখে ৬৩৯নং সাফকবলা দলিলে মোসাদ মনি বেগম ওরণে মনোয়ারা ও মোঃ মানিক পাঠান হইতে সূত্রে মালিক ও আমার পিতার ওয়ারিশ সূত্রে মালিক হইয়া অদ্য আছি। আব সুফিয়ান বিভিন্ন সময় আমাকে আসা যাওয়ার পথে বিভিন্ন খারাপ এগ ভঙ্গি দিয়ে কু-প্রস্তাব দেয়। আবু সুফিয়ান গংরা ভূমিদস্যু, উৎশৃঙ্খল, অত্যাছারী, জুলুমবাজ, দখলবাজ, কু-চক্রকারী, লম্পট, নারী লোভী ও আইন অমান্যকারী প্রকৃতির লোক।

আমার স্বামী বাবুল পাঠান দীর্ঘদিন যাবত প্রবাসে থাকতেন। তারা সেই সুযোগ নিয়ে আমাদের সম্পত্তি দখল করে একটি দালান ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করে। আমি তাতে বাধা প্রদান করলে তারা আমার উপর ক্ষিপ্ত ও উত্তেজিত হয়ে পড়ে। পরে আমার স্বামী প্রবাস থেকে দেশে ফিরে এসে তাদেরকে ঘর নির্মাণ করতে বাধা দিলে তারা আমাকে ও আমার স্বামীকে বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দিতে থাকে।

এ ঘটনায় আমার স্বামী এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ কে জানালে তাতেও কোন সমাধান না পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানার শরণাপন্ন হয়ে জমি দখলসহ আমাদেরকে বারংবার প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকায় আবু সুফিয়ান গংরাদের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি করি।

যাদের বিরুদ্ধে থানায় ডায়েরি করা হয়েছে, তারা হলেন ১। আবু সুফিয়ান (৪৩), পিতা মৃত মোহাম্মদ হাসিম পাঠান, ২। পারুল বেগম (৩৬), স্বামী আমির হোসেন পাটওয়ারী, ৩। আবুল হোসেন পাঠান (৪৬), পিতা মৃত মোঃ হাসিম পাঠান, ৪। মোঃ শামীম পাঠান (২২), পিতা মৃত আতিক পাঠান, ৫। মনুজা বেগম (৪০), স্বামী- মৃত আতিক পাঠান, ৬। তাহমিনা বেগম (৩২), স্বামী মোঃ জাকির পাঠান, সর্ব সাং- পশ্চিম সকদী, বাগাদী ইউনিয়ন, পোঃ সাহেব বাজার, থানা ও জেলা- চাঁদপুরসহ আরো অজ্ঞাত ৪/৫ জন।

বাবুল পাঠানের ভাই লোকমান পাঠান বলেন, জমির প্রকৃত মালিক হচ্ছেন আমার বাবা শেকান্তর পাঠান। ওয়ারিশ সূত্রে আমরা মালিক। এ ব্যাপারে আমরা আবু সুফিয়ান গংদের সাথে থানায় এবং কোর্টে উকিলদের মাধ্যমে কয়েকবার সালিশি বৈঠক করি। সেই সালিশি বৈঠকে আমরা আমাদের জমির সঠিক কাগজপত্র দেখাতে সক্ষম হই। পরে সালিশগণ আমাদেরকে জায়গা বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য আবু সুফিয়ান গংদের কে বলেন। কিন্তু আবু সুফিয়ানরা সালিশদের রায়কে অমান্য করে বিভিন্ন লোকজনদেরকে বলে বেড়াচ্ছে আমাদের জায়গা অন্য দিক দিয়ে আছে পরে বুঝিয়ে দিবে।

এলাকায় গিয়ে জানাযায়, আবু সুফিয়ান দীর্ঘদিন ধরে আদম ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন। তার খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে অনেক পরিবার। গ্রামের খেটে খাওয়া সহজ সরল মানুষগুলোকে বিভিন্ন সুবিধার লোভ দেখিয়ে বিদেশে নেওয়ার কথা বলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। মানুষদের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর দীর্ঘদিন যাবত এলাকা ছেড়ে বিভিন্ন স্থানে গাঁ ঢাকা দিয়ে ছিলেন তিনি।

বর্তমানে এলাকায় ফিরে এসে চাঁদপুর কোর্ট এলাকায় শিক্ষানবিশ উকিল পরিচয় দিয়ে গ্রামের অসহায় পরিবারকে বিভিন্নভাবে নানা কায়দায় সর্বহারা করে দিচ্ছে বলে জানান এলাকাবাসী। এমনকি তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে ভুয়া মামলা দিয়ে হয়রানি করবে বলেও হুমকি দিয়ে থাকে।

চাঁদপুর মডেল থানার (ওসি) মহাসিন বলেন, তাসলিমা বেগম নামের একজন থানায় একটি দরখাস্ত দিয়েছেন। দরখাস্তের বিষয়বস্তু খতিয়ে দেখার জন্য থানা থেকে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার জন্য শ্রমিকদের বলা হয়েছে। উভয় পক্ষকে কাগজপত্র নিয়ে থানায় আসতে বলা হয়েছে। তারা স্থায়ীভাবে মীমাংসা করবে বলে এলাকার জনপ্রতিনিধি দায়িত্ব নিয়েছে।

Related posts

Leave a Comment